গত মঙ্গলবার পাকিস্তানি মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরকে রহস্যজনকভাবে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় করাচির একটি ভাড়া বাসায়। পুলিশের ধারণা ছিল, হুমাইরার মৃত্যু হয়েছে অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিন আগে। কিন্তু এবার জানা গেল চমকে ওঠার মতো খবর, ৯ মাস আগেই মৃত্যু হয়েছে অভিনেত্রীর! তদন্তকারীদের দাবি, তিনি আসলে গত বছরের অক্টোবরে মারা যান।
আরব নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হুমাইরার দেহ এতটাই পচে গিয়েছিল যে সেটি ছিল ‘চরম পর্যায়ের’। করাচি পুলিশ সার্জন সুমাইয়া সায়েদ তাঁর ময়নাতদন্তের পর জানান, মরদেহের অবস্থা দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন আগে মৃত্যু হয়েছে। হুমাইরার কল রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখা গেছে, তাঁর মুঠোফোন সর্বশেষ ব্যবহৃত হয়েছিল ২০২৪ সালের অক্টোবরে। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টেও গত বছরের সেপ্টেম্বরের পর থেকে আর কোনো কার্যক্রম ছিল না।
আগের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, হুমাইরার মৃত্যু হয়েছে অন্তত এক মাস আগে। কিন্তু বর্তমান তদন্ত বলছে, সময়সীমাটি আরও দীর্ঘ। এদিকে পিতা তার মরদেহ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানানোয় হুমাইরার দাফনের দায়িত্ব নিচ্ছেন তাঁর ভাই।
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। স্থানীয় লোকজন পুলিশকে জানান যে তাঁরা বেশ কয়েক দিন ধরে ফ্ল্যাটের আশপাশে কোনো গতিবিধি দেখেননি। ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) সৈয়দ আসাদ রাজা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মঙ্গলবার বেলা তিনটা নাগাদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বেশ কয়েকবার দরজায় কড়া নাড়ার পর কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন। ভেতরে গিয়ে পুলিশ মেঝেতে হুমাইরার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে।
হুমাইরা আসগর প্রায় এক যুগ ধরে পাকিস্তানের বিনোদন অঙ্গনে কাজ করছিলেন। তিনি মূলত মডেলিং দিয়েই ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরে টেলিভিশন রিয়েলিটি শো তামাশা ঘর-এর মাধ্যমে পরিচিতি পান। অভিনয় করেছেন ২০১৫ সালের আলোচিত ছবি ‘জালিবি’-তেও। সে সময় তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছিল।
তবে সম্প্রতি তিনি কাজ কমিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। একাকী জীবনযাপন করতেন, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুব একটা প্রকাশ্যে আসতেন না। হুমাইরার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের বিনোদন অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনেকে তাঁর রহস্যময় মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।