গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনীতে ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেছেন ছাত্র–জনতা। আজ বুধবার বিকেল থেকে তিন জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভে যোগ দেন। তাঁরা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান। নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও ফেনী প্রতিনিধির পাঠানো প্রতিবেদন।
নোয়াখালী
আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীর পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মাইজদী–চৌমুহনী প্রধান সড়কে বিক্ষোভ করেন এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। এ সময় বিক্ষোভকারীরা গোপালগঞ্জের হামলাকারীদের সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে তাঁদের দ্রুত গ্রেপ্তারের পর আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। নেতা–কর্মীরা প্রায় ১০ মিনিট ব্লকেড কর্মসূচি পালন করেন। এরপর সড়কের পাশে অবস্থান নেন তাঁরা।
ব্লকেড কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নোয়াখালী জেলা আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক ফরহাদুল ইসলাম, সিনিয়র মুখ্য সংগঠক নাহিদা সুলতানা, এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, সদস্য তুহিন ইমরানসহ অনেকে।
লক্ষ্মীপুর
গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে আজ বিকেলে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের ঝুমুর এলাকায় বিক্ষোভ হয়। এ সময় টানা দুই ঘণ্টা ধরে সড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের কারণে লক্ষ্মীপুর–ঢাকা–চট্টগ্রাম সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ জানান, এনসিপির নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে তাঁরা বিকেল চারটার দিকে সড়ক অবরোধ করেন এবং সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলে। এ সময় ছাত্র–জনতার আন্দোলনে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন তাঁরা।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল মোন্নাফ বলেন, গোপালগঞ্জের ঘটনার প্রতিবাদে বিকেল চারটা থেকে সড়ক অবরোধ করেন ছাত্ররা। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে তাঁরা অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ফেনী
গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ফেনীতে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্র–জনতা। আজ বিকেল সাড়ে চারটা থেকে মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল ফ্লাইওভারের দক্ষিণাংশে অবস্থান নেন তাঁরা। এ সময় ঢাকা–চট্টগ্রামমুখী দুই লেনে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য জাহিদুল ইসলাম সৈকত বলেন, ‘আমাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের ওপর যেভাবে হামলা চালানো হয়েছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এটি শুধু একটি রাজনৈতিক দলের ওপর হামলা নয়; বরং গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।’
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় সড়ক অবরোধ করে কেন্দ্রীয় নেতা–কর্মীদের গাড়িবহরে হামলা চালান নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু হয়।