সমাবেশের আগের দিন রাতেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। শুক্রবার রাত আটটার দিকে
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথমবারের মতো সমাবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শনিবার সকাল ১০টা থেকে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ওই সমাবেশ উপলক্ষে রাতেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার রাত আটটার দিকে সমাবেশস্থলে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা, জুলাই গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কারসহ সাত দফা দাবিতে এই জাতীয় সমাবেশ করতে যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।
সমাবেশ সফল করতে জামায়াত ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। সমাবেশে সারা দেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ নেতা-কর্মী অংশ নেবেন বলে আশা করছেন দলটির নেতারা। নেতা-কর্মীদের আনতে চার জোড়া বিশেষ ট্রেন ভাড়া করেছে দলটি।
শুক্রবার রাত আটটার দিকে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পূর্ব পাশে তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। সেখানে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। মঞ্চের সামনে জড়ো হয়েছেন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বেশ কিছু নেতা-কর্মী। তাঁদের কারও কারও পরনে ছিল জামায়াতের লোগো সংবলিত টি-শার্ট। কারও কারও মাথায় বাঁধা দলীয় সাদা ফিতা। আবার কেউ কেউ এনেছেন দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। মঞ্চের সামনে ত্রিপল বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের অনেকেই সেখানে শুয়ে-বসে সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ দিচ্ছেন দলীয় স্লোগান। রাতে সেখানেই থাকবেন বলে জানালেন অনেকে।
সমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন হামিদুর রহমান। দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা থেকে এসেছেন বলে জানালেন তিনি। সমাবেশের মূল মঞ্চের পাশেই বসে ছিলেন তিনি। জানতে চাইলে প্রথম আলোকে হামিদুর রহমান বলেন, ‘দিনাজপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১০-১২ হাজার নেতা-কর্মী আসবেন। তাঁরা আজ রাতে রওনা দেবেন। কিন্তু আমি বৃহস্পতিবার রাতেই এক বন্ধুর সঙ্গে চলে এসেছি। সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আছি। সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতেই মূলত আগেভাগে চলে এসেছি।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা থেকে এসেছেন আবদুল্লাহ আল-আমিন। তিনি বললেন, ‘প্রথমবারের মতো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতিহাসের সাক্ষী হতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। আগামীকাল এলে সমাবেশের সামনের অংশে জায়গা পাব না, তাই আগেই চলে এসেছি। রাতে মাঠেই থেকে যাব।’ সাব্বির আহমেদ এসেছেন গাজীপুর থেকে। তিনি বললেন, ‘কাল ঢাকায় ঢোকা কঠিন হবে। তাই আগেই চলে এলাম।’
এর আগে দুপুরে সমাবেশের সর্বশেষ প্রস্তুতি দেখতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ১৯ জুলাই (শনিবার) সকাল ১০টায় কোরআন তিলাওয়াত দিয়ে সমাবেশের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এরপর হামদ ও নাত পরিবেশন করা হবে। আর মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা দুইটায়।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, সমাবেশস্থলে ২০টি পয়েন্টে প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। ঢাকা শহরের বাইরে থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের জন্য কমপক্ষে ১৫টি পার্কিং পয়েন্ট রাখা হয়েছে। সারা দেশ থেকে কাল রাজধানীতে মানুষের ঢল নামবে।