স্ত্রী মিলনে জোর করা যাবে কি?
স্ত্রীর সঙ্গে জোরপূর্বক চাহিদা পূরণ না বলে বিষয়টি হাদিসে যেভাবে এসেছে সেভাবে বলা উচিত। স্বামীর যখন চাহিদা হয় স্ত্রী তখন সহবাসে অমত করতে পারবে কিনা? এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা কী?
কোন লোক তার স্ত্রীকে নিজ প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে ডাকলে সে যেন সাথে সাথে তার নিকট আসে, এমনকি সে চুলার উপর রান্না-বান্নার কাজে ব্যস্ত থাকলেও। (জামে আত-তিরমিজি ১১৬০)
কোন লোক তার স্ত্রীকে নিজ প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে ডাকলে সে যেন সাথে সাথে তার নিকট আসে, এমনকি সে চুলার উপর রান্না-বান্নার কাজে ব্যস্ত থাকলেও। (জামে আত-তিরমিজি ১১৬০)
মুফতি আবদুল্লাহ তামিম
২ মিনিটে পড়ুন
হাদিস শরিফে এই ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি এসেছে। স্বামী সহবাসের জন্য স্ত্রীকে ডাকলে স্ত্রী যদি কোনো কারণ ছাড়াই অমত করে মালাইকাহ (ফেরেশতা) সেই স্ত্রীর উপরে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে। সুতরাং কোনো নারীর জন্য কোনো কারণ ছাড়া ফেরেশতার অভিশাপ নেয়ার কী দরকার।
অন্য হাদিসে আছে, স্বামী তার প্রয়োজনে স্ত্রীকে ডাকলে সে যদি তন্দুরে (চুলায় কাজে) থাকে তবুও সে যেন সাড়া দেয়।
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَمْرٍو الرَّازِيُّ، حَدَّثَنَا جَرِيرٌ، عَنِ الأَعْمَشِ، عَنْ أَبِي حَازِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ “ إِذَا دَعَا الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ إِلَى فِرَاشِهِ فَأَبَتْ فَلَمْ تَأْتِهِ فَبَاتَ غَضْبَانَ عَلَيْهَا لَعَنَتْهَا الْمَلاَئِكَةُ حَتَّى تُصْبِحَ
হজরত আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন স্বামী তার স্ত্রীকে তার সাথে বিছানায় শোয়ার জন্য আহবান করার পর যদি স্ত্রী না আসে এবং স্বামী তার উপর অসন্তুষ্ট অবস্থায় রাত কাটায়, তাহলে সকাল পর্যন্ত ফেরেশতাগণ ঐ স্ত্রীকে অভিসম্পাত করতে থাকেন। (সুনানে আবু দাউদ ২১৪১)
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا مُلاَزِمُ بْنُ عَمْرٍو، قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ اللَّهِ بْنُ بَدْرٍ، عَنْ قَيْسِ بْنِ طَلْقٍ، عَنْ أَبِيهِ، طَلْقِ بْنِ عَلِيٍّ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا الرَّجُلُ دَعَا زَوْجَتَهُ لِحَاجَتِهِ فَلْتَأْتِهِ وَإِنْ كَانَتْ عَلَى التَّنُّورِ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .
হজরত তলক ইবনু আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন লোক তার স্ত্রীকে নিজ প্রয়োজন পূরণের উদ্দেশ্যে ডাকলে সে যেন সাথে সাথে তার নিকট আসে, এমনকি সে চুলার উপর রান্না-বান্নার কাজে ব্যস্ত থাকলেও। (জামে আত-তিরমিজি ১১৬০)
ইসলামি রীতি অনুসারে জৈবিক চাহিদা পুরা করার জন্যও রয়েছে সওয়াবের ঘোষণা। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
(স্ত্রী মিলন করার মাধ্যমে) তোমাদের লজ্জাস্থানের মধ্যে সদকা রয়েছে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসুল, আমাদের কেউ চাহিদা পুরা করবে, আর এর জন্য সওয়াব হবে? নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, বলো! যদি সে হারাম জায়গায় চাহিদা পুরা করত, তার গুনাহ হতো না? তাই যখন সে এটাকে হালাল জায়গায় পুরা করবে, তখন সওয়াব হবে। (মুসলিম : ১০০৬)।
স্বামীকে গুনাহ থেকে বাঁচানোর জন্য একটু কষ্ট হলেও তার ডাকে সাড়া দেয়া উচিত। স্বামীর চাহিদা পূরণ না করলে গুনাহের আশঙ্কা থাকলে স্ত্রীও গুনাহের ভাগিদার হবে। অসুস্থতা ভিন্ন বিষয়। অসুস্থ থাকলে স্বামীরও এ বিষয়টা বুঝা দরকার। মধুর সম্পর্কের মাধ্যমেই মিল মহব্বত হয়। নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
কোনো স্ত্রী আল্লাহর হক আদায় করতে পারবে না যতক্ষণ না সে তার ওপর অর্পিত স্বামীর হক আদায় করে। স্বামী যদি তাকে আহ্বান করে আর সে হাওদার কাষ্ঠেও থাকে, তারপরও তাকে সুযোগ দিতে হবে। (আল-মুজামুল কাবির ৫০৮৪)।