মাত্র ৭ মাসের এক কন্যাশিশু—যে পৃথিবীর নিষ্ঠুরতা বোঝার বয়সেই পৌঁছায়নি, সেই শিশুকেই সুদের টাকা আদায়ের হাতিয়ার বানিয়েছে একই গ্রামের প্রতিবেশী এক পরিবার। গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামে শনিবার (৯ আগস্ট) ঘটে যায় এই হৃদয়বিদারক ঘটনা, যা শোনামাত্র এলাকাবাসী হতবাক হয়ে যায়।
পুলিশ জানায়, দুর্গাপুর গ্রামের আব্দুল মতিন কিছুদিন আগে একই গ্রামের সুজা মিয়ার কাছ থেকে সুদের ওপর ৫০ হাজার টাকা ধার নেন। শনিবার সকালে সুজা মিয়ার পরিবার প্রতিবেশী হিসেবে মতিনের ৭ মাসের কন্যাকে ‘বেড়ানোর’ কথা বলে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু ফেরত দেওয়ার সময় তারা স্পষ্ট জানিয়ে দেয়—“টাকা পরিশোধ না করলে শিশু ফেরত পাবেন না।”
অভিযোগে বলা হয়, অসহায় মা ইসমোতারা পাঁচবার শিশুকে ফেরত আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। শুধু তাই নয়, স্থানীয় ইউপি সদস্যের মধ্যস্থতাও ব্যর্থ হয়। বরং শিশুটির পরিবারকে মারধরের ঘটনাও ঘটে।
শেষ পর্যন্ত ইসমোতারা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে। এসময় সুজা মিয়া (৪৫), তার স্ত্রী দুলালী বেগম (৪২), ছেলে দুলাল (২২) ও আলাল (১৮)-কে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর আলম তালুকদার জানান, “সুদের টাকা না পেয়ে ৭ মাসের শিশুকে আটকে রাখার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্য ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।”