নেত্রকোণার মদনে সাবেক স্ত্রীর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় সানজিল মীর (২২) নামের এক যুবকের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) রাতে রাজধানীর ভাষানটেক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ময়মনসিংহ র্যাব-১৪ এর একটি দল।
এর আগে গত ১ আগস্ট তার বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। গ্রেপ্তার সানজিল মীর উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের আলমশ্রী গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মীরের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী তরুণী পোশাক কারখানায় চাকরির সুবাদে চট্টগ্রামে থাকতেন। অভিযুক্ত সানজিল মীর সেখানে পাশের বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। প্রায়ই ওই তরুণীকে প্রেমের প্রস্তাব দিতেন সানজিল। প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ওই তরুণীর গোসল করার সময় গোপনে মোবাইল ফোনে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন তিনি।
পরে ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে গত ৭ এপ্রিল দেড় লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে তাকে বিয়ে করেন সানজিল। কিন্তু বিয়ের পরও সানজিল বেশ কিছু আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন এবং বিভিন্ন অজুহাতে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই তরুণী বাধ্য হয়ে নিজের উপার্জনের পুরো অর্থ সানজিলকে দিয়ে দেন। এরপর আরও যৌতুক দাবি করতে থাকেন সানজিল।
ভুক্তভোগী যৌতুক দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সানজিল তাকে ইমো ভিডিও কলে অন্য পুরুষের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করে অর্থ উপার্জনের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে দুই মাস আগে ওই নারী বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপরও সানজিল ভুক্তভোগীর নামে ‘ময়না তেতুলিয়া’ নামে একটি ভুয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলেন এবং নিজের ‘S M Sanjil Mir’ অ্যাকাউন্ট থেকে ভুক্তভোগীর আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেন।
পরিবারের পক্ষ থেকে গত ১৭ জুলাই অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানালে তারা উল্টো খারাপ আচরণ করে ও হুমকি দেয়। পরবর্তীকালে ২১ জুলাই আদালতের মাধ্যমে তাদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। কিন্তু অভিযুক্ত সানজিল মীর বিবাহবিচ্ছেদের পরও আপত্তিকর ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দিতে থাকেন। ঘটনায় গত ১ আগস্ট তরুণীর ভাই বাদী হয়ে মামলা করেন বলে জানান মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাইম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান। সোমবার রাতে র্যাব-১৪, ময়মনসিংহের একটি দল র্যাব-৪ মিরপুরের সহযোগিতায় সানজিল মীরকে গ্রেপ্তার করে।
র্যাব-১৪ কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সামসুজ্জামান চজ গণমাধ্যমকে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সানজিল মীরকে মদন থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।