জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন নীলা ইসরাফিল। সোমবার (২৮ জুলাই) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে তিনি এ ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে দলটির নেতৃত্বের উদ্দেশে একটি জোরালো প্রশ্নও তোলেন তিনি। ঘোষণার পর এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘নীলা ইসরাফিল এনসিপির কেউ ছিলেন না। তিনি শুধু নাগরিক কমিটিতে যুক্ত ছিলেন।’
আখতার হোসেনের এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নীলা ইসরাফিল প্রশ্ন তোলেন ‘আপনারা এতদিন আমাকে কী ভিত্তিতে ব্যবহার করেছেন?’ সোমবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমন প্রশ্ন করেন তিনি।
পোস্টে তিনি লেখেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির কাছে আমার একটাই প্রশ্ন আপনারা এতদিন আমাকে কীসের ভিত্তিতে রেখেছিলেন ?আজ যখন আপনাদের নেতার অপরাধ, অনাচার, এবং লিপ্সার বিরুদ্ধে আমি মুখ খুলেছি, তখন আমি আপনাদের কেউ না? এতদিন আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার ত্যাগ আপনাদের পক্ষে ছিল, তখন তো কোনো সমস্যা ছিল না আপনারা কি দল করেন, না কেবল ক্ষমতা আর নারীদের অসম্মান করে ছুঁড়ে ফেলার একটা কারখানা চালান?
নীলা আরো লেখেন, আপনাদের অপরাধ ঢাকার জন্য আজ আমাকেই অস্বীকার করছেন? সত্য বললেই কি নারীকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়? এটাই কি আপনাদের নৈতিকতা? এই প্রশ্ন আজ শুধু আমার না এই প্রশ্ন প্রতিটি নারীর, যাকে আপনারা দলীয় পরিচয়ে পরিচিত করেছেন, আর পরে ‘অপরিচিত’ বানিয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি আজ আমাকে অস্বীকার করছে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায় আপনারা কি আমাকে সত্যিই কখনো অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন, নাকি কেবল নিজের স্বার্থ উদ্ধার করতেন? আমার কণ্ঠ যখন আপনাদের পক্ষে ছিল, তখন তো ‘আমাদের নেত্রী’, ‘আমাদের শক্তি’ বলে গলা ফাটাতেন। এখন যখন আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছি, তখন ‘সে তো আমাদের কেউ না’? এটা কি কোনো রাজনৈতিক দলের মূল্যবোধ? নাকি এটি প্রমাণ করে, দল নয়, আপনারা ব্যক্তি রক্ষায় ব্যস্ত?
তিনি আরো লেখেন, জনগণ দেখছে, বুঝছে। এবং প্রশ্ন করছে এই দল কি আদৌ জনগণের ন্যায় ও নৈতিকতার প্রতিনিধিত্ব করে? আমি অবাক হই না যে আজ জাতীয় নাগরিক পার্টি আমাকে অস্বীকার করছে। কারণ সত্য বললেই অনেক সময় আপনজনই মুখ ফিরিয়ে নেয়। কিন্তু আমি একটিই প্রশ্ন করতে চাই যদি আমি আপনাদের কেউ না হয়ে থাকি, তাহলে আমার কণ্ঠ, আমার পরিচয়, আমার মাঠের উপস্থিতি এতদিন আপনারা কেন ব্যবহার করেছেন? একজন নারী যখন অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখনই তাকে দলহীন, আশ্রয়হীন প্রমাণ করতে পারাটাই কি রাজনীতির নতুন রীতি? আমি কারো পরিচয়ে নই, আমি আমার ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো একজন মানুষ। আমাকে অস্বীকার করে সত্যকে অস্বীকার করা যাবে না।